জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যান আবদুর রহমান খানের অপসারণের দাবি জানিয়েছে এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদ। সংগঠনটির নেতারা অভিযোগ করেছেন, চেয়ারম্যানের প্রতি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের আস্থা ও বিশ্বাসের সংকট সৃষ্টি হয়েছে, যার ফলে তাঁর দায়িত্বে থাকা এখন আর গ্রহণযোগ্য নয়।
আজ সোমবার এক সংবাদ সম্মেলনে ঐক্য পরিষদের পক্ষ থেকে বলা হয়, আগামী বৃহস্পতিবার (২৯ মে) এর মধ্যে আবদুর রহমান খানকে অপসারণ না করা হলে আরও কঠোর কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে। একইসঙ্গে, চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে লাগাতার অসহযোগিতার কর্মসূচিও চলমান থাকবে বলে জানানো হয়।
সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য দেন অতিরিক্ত কর কমিশনার মোনালিসা শাহরিন, উপকর কমিশনার রইসুন নেসা এবং এনবিআরের দ্বিতীয় সচিব শাহাদাত জামিল। এ সময় আন্দোলনে যুক্ত আরও অনেক কর্মকর্তা-কর্মচারী উপস্থিত ছিলেন।
আন্দোলন স্থগিত, তবে কর্মসূচি চলমান
গতকাল রোববার রাতে আন্দোলন সাময়িকভাবে স্থগিত ঘোষণা করা হলেও, আন্দোলনের মূল দাবিগুলো আদায়ে কর্মসূচি অব্যাহত থাকবে বলে জানানো হয়েছে। আজ থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য সারা দেশের শুল্ক ও কর দপ্তরগুলোতে ঘোষিত পূর্ণদিবস কর্মবিরতি আপাতত স্থগিত রাখা হয়েছে।
এদিকে অর্থ মন্ত্রণালয়ও বিষয়টি নিয়ে নড়েচড়ে বসেছে। গতকাল বিকেলে এক বিবৃতিতে জানানো হয়, আগামী ৩১ জুলাইয়ের মধ্যে এনবিআর ও অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগ নিয়ে জারি করা অধ্যাদেশে প্রয়োজনীয় সংশোধনী আনা হবে। এই প্রতিশ্রুতিকে সমঝোতার ইঙ্গিত হিসেবে দেখছেন অনেকেই।
রাজস্ব আদায় অব্যাহত রাখতে অতিরিক্ত সময় কাজ
সংবাদ সম্মেলনে আন্দোলনরত কর্মকর্তারা জানান, রাজস্ব খাতে যেন ক্ষতি না হয়, সে জন্য তাঁরা প্রতিদিন তিন থেকে চার ঘণ্টা অতিরিক্ত সময় কাজ করবেন। জুন মাসে ‘কেমন এনবিআর চাই’—এই শিরোনামে একটি সেমিনার আয়োজনের কথাও ঘোষণা করা হয়েছে।
চার দফা দাবিতে আন্দোলন
সংস্কার ঐক্য পরিষদের চার দফা দাবি হলো:
-
এনবিআর পুনর্গঠনের ঘোষিত অধ্যাদেশ অবিলম্বে বাতিল করা,
-
এনবিআর চেয়ারম্যান আবদুর রহমান খানের অপসারণ,
-
রাজস্ব সংস্কার পরামর্শক কমিটির সুপারিশ প্রকাশ করা,
-
রাজস্বব্যবস্থা সংস্কারে সব অংশীজনের মতামত অন্তর্ভুক্ত করে প্রস্তাব চূড়ান্ত করা।
প্রসঙ্গত, গত ১২ মে সরকার এক অধ্যাদেশের মাধ্যমে এনবিআর ও অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগ বিলুপ্ত করে ‘রাজস্ব নীতি বিভাগ’ ও ‘রাজস্ব ব্যবস্থাপনা বিভাগ’ নামে দুটি পৃথক বিভাগ গঠনের ঘোষণা দেয়। এই সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে এনবিআর ছাড়াও ঢাকা কাস্টম হাউস, চট্টগ্রাম বন্দর, বেনাপোল ও ভোমরাসহ দেশের বিভিন্ন শুল্ক স্টেশনে আন্দোলন শুরু হয়।

0 Comments