রাষ্ট্রীয় সংস্কার নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে ঐকমত্য গঠনের লক্ষ্যে আজ মঙ্গলবার ঢাকার ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের দ্বিতীয় পর্বের বিষয়ভিত্তিক আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়।
আলোচনায় সংবিধানের ৭০ অনুচ্ছেদে আস্থা ভোট সংযোজন বিষয়ে একাধিক দলের মধ্যে সমর্থন দেখা যায়। বিএনপি ও জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) এ প্রস্তাবের পক্ষে মত দিয়ে জানায়, সরকারের স্থায়িত্ব নিশ্চিত করতে এ বিধান থাকা জরুরি। তবে কিছু দল এই বিষয়ে আরও বিস্তারিত আলোচনা প্রয়োজন বলে মত দিয়েছে।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাউদ্দিন আহমেদ বলেন, উপমহাদেশের রাজনৈতিক বাস্তবতা ও অভিজ্ঞতার আলোকে দেখা যাচ্ছে, আস্থা ভোটের বিধান না থাকলে সরকারের স্থায়িত্ব বিঘ্নিত হবে, যা দেশের জন্য অস্থিতিশীল পরিস্থিতির জন্ম দিতে পারে।
বিএনপি আরও প্রস্তাব করে, আস্থা ভোট, অর্থবিল এবং সংবিধান সংশোধন ব্যতীত সংসদ সদস্যদের স্বাধীন মতপ্রকাশের সুযোগ রাখা যেতে পারে। তবে জাতীয় নিরাপত্তার মতো গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে আস্থা ভোট অপরিহার্য হওয়া উচিত।
এনসিপির যুগ্ম আহ্বায়ক সারোয়ার তুষার বলেন, সরকারে স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করতে অর্থবিলের পাশাপাশি আস্থা ভোটের বিধান থাকা উচিত।
কমিশনের সহসভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ জানিয়েছেন, আলোচনার ভিত্তিতে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত গ্রহণের আগে আরও একটি পর্বে আলোচনা হবে।
আলোচনায় গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি বলেন, আস্থা ভোটের বিধান রাখলে প্রধানমন্ত্রী কোনো চ্যালেঞ্জের মুখে পড়বেন না, যা গণতান্ত্রিকভাবে গ্রহণযোগ্য নয়। তাই তিনি বিষয়টি নিয়ে পরবর্তী বৈঠকে বিস্তারিত আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেওয়ার পক্ষে মত দেন।
আজকের বৈঠকে ৩০টি রাজনৈতিক দল অংশ নেয়, যার মধ্যে রয়েছে: বিএনপি, এনসিপি, এলডিপি, খেলাফত মজলিস, রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলন, আমার বাংলাদেশ পার্টি (এবি পার্টি), নাগরিক ঐক্য, বাংলাদেশ জাসদ, এনডিএম, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী, জেএসডি, গণসংহতি আন্দোলন, গণ অধিকার পরিষদ, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি, সমমনা জোট, ১২–দলীয় জোট, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ, গণফোরাম, সিপিবি, বাসদ, বাংলাদেশ লেবার পার্টি, জাকের পার্টি, জাতীয় গণফ্রন্ট, আমজনতার দল, ভাসানী অনুসারী পরিষদ, নেজামে ইসলাম পার্টি, বাসদ (মার্ক্সবাদী), জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশ ও ইসলামী ঐক্যজোট।
কমিশন আগামী জুলাই মাসে আলোচনার ভিত্তিতে ‘জুলাই সনদ’ প্রণয়নের লক্ষ্যে কাজ করছে।
0 Comments