চট্টগ্রামে আইনজীবী সাইফুল ইসলাম হত্যা ও সহিংসতার ঘটনায় দায়ের হওয়া পাঁচ মামলায় সনাতনী জাগরণ জোটের মুখপাত্র চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের জামিন আবেদন নামঞ্জুর করেছেন আদালত।
আজ মঙ্গলবার চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আবু বকর সিদ্দিক শুনানি শেষে এ আদেশ দেন।
চট্টগ্রাম মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত উপকমিশনার (প্রসিকিউশন) মফিজ উদ্দিন জানান, কোতোয়ালি থানায় দায়ের করা হত্যা, পুলিশের ওপর হামলা ও গাড়ি ভাঙচুরসহ পাঁচ মামলায় জামিন আবেদন করেন চিন্ময়ের আইনজীবীরা। রাষ্ট্রপক্ষ থেকে জামিনের বিরোধিতা করা হয়। উভয় পক্ষের শুনানি শেষে আদালত জামিন আবেদন নাকচ করেন।
চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের শারীরিক অবস্থা খারাপ উল্লেখ করে আদালতে আবেদন করা হলে বিচারক কারা কর্তৃপক্ষকে প্রয়োজনীয় চিকিৎসার নির্দেশ দেন।
চিন্ময়ের আইনজীবী অপূর্ব কুমার ভট্টাচার্য জানান, তাঁর মক্কেল লিভার সিরোসিসে আক্রান্ত এবং ষড়যন্ত্রমূলকভাবে মামলায় জড়ানো হয়েছে। “তিনি নির্দোষ,” বলেন তিনি।
গত ৫ মে আদালত ভার্চ্যুয়াল শুনানিতে সাইফুল ইসলাম হত্যা মামলায় চিন্ময়কে গ্রেপ্তার দেখান। এরপর তাঁকে আরও কয়েকটি মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়।
জামিন শুনানিকে কেন্দ্র করে চট্টগ্রাম আদালত প্রাঙ্গণে কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয়। এর পেছনে রয়েছে ২০২৩ সালের ২৬ নভেম্বর সংঘটিত আলোচিত সহিংসতা, যেদিন জামিন শুনানির প্রেক্ষিতে সৃষ্ট সংঘর্ষে আইনজীবী সাইফুল ইসলামকে পিটিয়ে ও কুপিয়ে হত্যা করা হয়।
এ ঘটনায় নিহতের বাবা জামাল উদ্দিন ৩১ জনকে আসামি করে মামলা করেন। পরে পুলিশের ওপর হামলা, বিচারপ্রার্থীদের ওপর হামলা ও ককটেল বিস্ফোরণসহ আরও পাঁচটি মামলা হয়। সব মিলিয়ে গ্রেপ্তার হন ৫১ জন, যাঁদের মধ্যে ২১ জন হত্যার মামলায় গ্রেপ্তার রয়েছেন।
আদালত সূত্রে জানা গেছে, আসামিদের মধ্যে চন্দন দাস, রিপন দাস ও রাজীব ভট্টাচার্য ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। তাঁদের ভাষ্য অনুযায়ী, রিপন দাস সাইফুল ইসলামের ঘাড়ে বঁটি দিয়ে কোপ দেন এবং চন্দন দাস কিরিচ দিয়ে আঘাত করেন। পরে অন্তত ১৫–২০ জন মিলে তাঁকে নির্মমভাবে পিটিয়ে হত্যা করেন।
এর আগে, ২০২৩ সালের ৩১ অক্টোবর বিএনপির তৎকালীন নেতা ফিরোজ খান কোতোয়ালি থানায় চিন্ময় দাসসহ ১৯ জনের বিরুদ্ধে জাতীয় পতাকা অবমাননার অভিযোগে রাষ্ট্রদ্রোহের মামলা করেন। ওই বছরের ২৫ নভেম্বর চিন্ময় দাসকে ঢাকায় গ্রেপ্তার করা হয়। পরে ফিরোজ খানকে দল থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়।
0 Comments